Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

পুষ্টি নিরাপত্তায় সবজিঃ আগামী দিনের কৌশল ও সম্ভাবনা

পুষ্টি নিরাপত্তায় সবজিঃ আগামী দিনের কৌশল ও সম্ভাবনা

কৃষিবিদ মোঃ শাহজাহান আলী বিশ্বাস

সুস্থ-সবলভাবে বেঁচে থাকতে পুষ্টিকর খাবার খেতেই হবে। এর চাহিদা পূরণে শাকসবজির অবদান অনন্য। শাকসবজিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থসহ অন্যান্য অনেক পুষ্টি উপাদান। সে সাথে আঁশে ভরপুর। এসব পুষ্টি উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, খাবারে রুচি আনে। আমরা শুধু মাছ, মাংসসহ আমিষ জাতীয় খাবারের দিকে ঝুঁকে থাকি। সবজিও যে শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ তা অনেকেই আমলে নেই না। কিন্তু শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টির সরবরাহ নিশ্চিত করতে সবজি গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই। রঙিন শাকসবজিতে রয়েছে এন্টি অক্সিডেন্ট। শরীরের নানা রকম জৈবিক কর্মকা- পরিচালনা, শরীর ও বুদ্ধির বিকাশেও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে সবজি। 
বাংলাদেশের ভূপ্রকৃতি ও জলবায়ু সবজি উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। দেশের প্রায় সর্বত্র সারা বছর ধরে এমন কোনো না কোনো সবজি উৎপন্ন হচ্ছে। বাংলাদেশে আলুসহ প্রায় ১৫৬ প্রজাতির শাকসবজি উৎপন্ন হয়ে থাকে। রবি মৌসুমে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ হেক্টর জমিতে এবং খরিপ মৌসুমে প্রায় পৌনে চার লাখ হেক্টর জমিতে এসব সবজির আবাদ হচ্ছে। এই দুই মৌসুম মিলিয়ে যে সবজি উৎপন্ন হয়, তার পরিমাণ আলুসহ প্রায় ৩০৩.৩২ লাখ মে. টন (সূত্র : ডিএই, আগস্ট ২০২১)। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, সমভূমি জমি, বাড়ির আঙ্গিনা, বাড়ির ছাদে, পানিতে, মাচায়, ঘরের চালে, চর ভূমিতে, উপকূলীয় অঞ্চলে, ভাসমান ও হাইড্রোপনিক পদ্ধতিতে সবজি চাষের মাধ্যমে এর পরিধি আরও বাড়ার সুযোগ আছে। এসব জায়গায় সবজি উৎপাদন বৃদ্ধিতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার যা মাঠে এখন চলমান। সুস্থ সবল বীজ আর যতেœ দেশের সব ধরনের মাটিতেই নানা রকম সবজি ফলানো সম্ভব হয়। গবেষণা বাড়ানোর পাশাপাশি নতুন নতুন উদ্ভাবিত জাতের সবজি কৃষকপর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে হবে। তাহলে সবজির চাষের পরিধি আরও বৃদ্ধি পাবে।
একসময় ভালো স্বাদের সবজির জন্য শীতকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতো। টমেটো, লাউ, কপি বা নানা পদের শাক শীতকাল ছাড়া বাজারে মিলতো না। গ্রীষ্মকাল ছিল সবজির আকালের সময়। গত এক যুগে পরিস্থিতি বদলে গেছে। এখন প্রায় সারা বছর ২০ থেকে ২৫ জাতের সবজি খেতে পারছে দেশের মানুষ। তুলনামূলকভাবে দেশে সব ধরনের সবজির দামও কমেছে। বিশেষ করে, নানা জাতের শাক এখন শুধু বাজারে নয়, অলিগলিতে ভ্যানে করে বিক্রি হচ্ছে। গত দশকে সবজি চাষে বাংলাদেশে নীরব বিপ্লব ঘটে গেছে। সবজি উৎপাদন বৃদ্ধির হারের দিক থেকে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে তৃতীয়। স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশে সবজির উৎপাদন বেড়েছে পাঁচ গুণ। বাংলাদেশে সবজির আবাদি জমির পরিমাণ ৫ শতাংশ হারে বেড়েছে। এই হার বিশ্বে সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের কৃষি ও খাদ্য সংস্থা (এফএও)।
সবজি উৎপাদনে বাংলাদেশ ব্যাপক সফলতা অর্জন করলেও গ্রহণের দিক থেকে একেবারেই নিচের সারিতে অবস্থান করছে। মাথাপিছু চাহিদা অনুযায়ী সবজি গ্রহণ সম্ভব হচ্ছে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রতিদিন একজন সুস্থ সবল মানুষের ২২০ গ্রাম সবজি গ্রহণ করা উচিত। কিন্তু দেশে মাথাপিছু সবজি সরবরাহ নিশ্চিত করা যাচ্ছে মাত্র ১২৫ গ্রাম (সূত্র : এফএও, ডিএই)। সংশ্লিষ্ট ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতি বছর সবজির অপচয় রোধ, চাষাবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধি এবং নিজেদের সবজি খাওয়ার অভ্যাস না পাল্টালে সবজি গ্রহণের দিক দিয়ে পিছিয়েই থাকতে হবে। সম্প্রতি সবজির উৎপাদন বৃদ্ধির এক আশাব্যঞ্জক চিত্র বিভিন্ন গবেষণা ও সমীক্ষায় উঠে এসেছে। যেমন- সবজির আবাদি জমির হার বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ প্রথম, উৎপাদন বৃদ্ধির হারের দিক থেকে তৃতীয়। সবজি উৎপাদনের এই ব্যাপক অগ্রগতি সত্ত্বেও বাংলাদেশের মানুষের গড়ে প্রতিদিন প্রতি জনের সবজি খাওয়ার পরিমাণ কম। আমরা যদি অনুমোদিত মাত্রায় সবজি খেতে চাই, তাহলে সবজি উৎপাদন ও খাওয়ার অভ্যাস প্রায় দ্বিগুণ করতে হবে। এই পরিস্থিতিতে আমরা সবজি উৎপাদনে যে অগ্রগতি অর্জন করেছি, তাতে সন্তুষ্ট থাকলে চলবে না। সবজি উৎপাদন বৃদ্ধির এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে।
শাকসবজি পচনশীল তবে কিছু প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতির মাধ্যমে এর সংরক্ষণ করা বা মেয়াদ বৃদ্ধি করা সম্ভব। কোন পণ্যের প্রক্রিয়াকরণ করা হলে সেই পণ্যের প্যাকেজিং করা অত্যাবশ্যকীয়। প্রক্রিয়াকরণ ও প্যাকেজিং পণ্যের গুণগতমান বৃদ্ধি করে, সেলফলাইফ বৃদ্ধি করে ও মূল্য সংযোজন ঘটিয়ে পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি করে। সময় ও অর্থ সাশ্রয়ী, পুষ্টি ও গুণাগুণ অক্ষুণœ, রেডি-টু-কুক, কাটাকুটির ঝামেলামুক্ত, সহজে বহনযোগ্য ফ্র্রেশকাট শাকসবজির বাজার ক্রমেই সম্প্র্রসারিত হচ্ছে। ফ্রেশকাট শাকসবজির আন্তর্জাতিক বাজারও ক্রমশ সম্প্রসারণশীল। সবচেয়ে বেশি ফ্রেশকাট ব্যবহার করা হয় আমেরিকায় যার আর্থিক মূল্যমান ৪.৪ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশে ফ্রেশকাট সবজি ও ফলের রপ্তানি বাজার সীমিত আকারে হলেও শুরু হয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে বেশ কয়েকটি কোম্পানি আমেরিকা ও ইংল্যান্ডে ফ্রেশকাট সবজি রপ্তানি শুরু করেছে।
একবিংশ শতাব্দীতে আরও দ্রুত নগরায়ণ এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধি ফলে নির্দিষ্ট কৃষি জমির বাণিজ্যিক ভার্টিক্যাল চাষাবাদ ছাড়া অন্য কোন বিকল্প নেই, যা অবশ্যই নগর কৃষির অন্তর্গত। ভবিষ্যতের জন্য একমাত্র মাধ্যম হবে নগর ভার্টিক্যাল কৃষি ফার্ম। বাণিজ্যিকনগর কৃষি আরো টেকসই করা সম্ভব, এতে সেচের পানির অপচয় ৪০-৬০% কমিয়ে এনে ৩-৪ গুণ ফলন বাড়ানো যায় যেখানে হাইড্রোপনিক্যালি পুষ্টি উপাদানসমৃদ্ধ পানিকে অটোমেটিক এবং জলবায়ু-নিয়ন্ত্রিত বিল্ডিংয়ে সংরক্ষণ করে পুনরায় ব্যবহার করা হয়। বাণিজ্যিকনগর ভার্টিক্যাল ডিভাইজ, গ্রিনহাউজ হাইড্রোপনিক, একুয়াপনিক্স, ছাড়াও স্মার্ট ফার্মিং ডিভাইজ, স্বয়ংক্রিয় সেচসমৃদ্ধ ভার্টিক্যাল লাইন ডিভাইজ, স্বয়ংক্রিয়  ছাদবাগান ঠা-াকরণ ডিভাইস ইত্যাদি ব্যবহার করে টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, বিদেশি ব্রাসেলস স্প্রাউট, লেটুস, লাল টমেটো, কালো টমেটো, শসা, লালশাক, ডাঁটাশাক, ধনিয়াপাতা, ক্যাপসিকাম, চাইনিজ বাঁধাকপি, ছাড়াও সালাদ অনুসঙ্গ পুদিনা, সেলেরি, পেঁয়াজপাতা সবজি চাষাবাদ এখন আমাদের দেশেই সম্ভব।
গবেষণায় জানা যায়, ঢাকা শহরের ৭৬% ছাদ-বাগানি প্রশিক্ষণ নিতে চায়। প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তার জন্য নিকটস্থ কৃষি তথ্য সার্ভিস, কৃষি অফিস, হর্টিকালচার সেন্টার ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগসহ ফেসবুক গ্রুপগুলো পরামর্শ স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রদান করে। অনলাইন পোর্টাল করে, ফেসবুকে গ্রুপ করে ফসল/ফল সমস্যা সম্পর্কে তথ্য আদান-প্রদান করা যেতে পারে। সম্প্রতি নগর কৃষি পাইলট প্রকল্প চালু করেছে। এই প্রকল্পের আওতায় শুরুতে ঢাকা শহরে প্রায় ৬০০ ছাদবাগান টার্গেট করে কাজ শুরু করেছে। বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা মডিউলে রাসায়নিক সার ও মাটিতে সংযোজিত অন্যান্য বস্তু ব্যবহার করার সময় বাগানি বা কৃষককে মাটি জীবাণুমুক্ত করা, ভারী ধাতুর উপস্থিতি পরীক্ষা করে মাটির স্বাস্থ্য রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়টি সংকটপূর্ণ বৈশিষ্ট্য বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। সবজি চাষের ক্ষেত্রে মাটি শোধনের পাশাপাশি গ্রোয়িং মিডিয়ার গুণাগুণ ও স্বাস্থ্য রক্ষা করতে হবে।
জনসাধারণের মাঝে সবজি আবাদ ও গ্রহণ বৃদ্ধি করতে কৃষি মন্ত্রণালয় প্রতি বছর রাজধানীতে জাতীয় পর্যায়ে সবজি মেলার আয়োজন করে থাকে। মেলায় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সবজি উৎপাদন প্রযুুক্তি তুলে ধরে। যা নতুন নতুন সবজি সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ ছাড়াও পরিবর্তিত জলবায়ুতে পুষ্টি নিরাপত্তা ও দারিদ্র্য বিমোচনে বছরব্যাপী নিরাপদ সবজি চাষের গুরুত্ব প্রচারে সেমিনার এবং মেলার উদ্যোগ গ্রহণ করে থাকে কৃষি মন্ত্রণালয়। এই সেমিনার ও মেলার আয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা সবজি চাষ, ব্যবহার, বাণিজ্যিকীকরণ, মূল্য সংযোজন বিষয়ে যে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করবেন সেই তথ্য প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছে গণমাধ্যম, সম্প্রসারণকর্মী ও কৃষি তথ্য সার্ভিসের প্রচার প্রচারণার মাধ্যমে পৌঁছাতে পারলে দেশের সকল মানুষ সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ হবে এবং পুষ্টি নিরাপত্তাকে বিবেচনায় রেখে সবজি গ্রহণের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশের কৃষি সেক্টরে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপ্রবণ অবস্থানে আছে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রধান প্রভাবগুলো-মাটি ও পানিতে লবণাক্ততার অনুপ্রবেশ, জলমগ্নতা, উপকূলীয় বন্যা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং উপকূলীয় জলোচ্ছ্বাস। দক্ষিণাঞ্চলের নিচু এলাকাসমূহ উপকূলীয় বন্যা ও অনিয়মিত বৃষ্টিপাতের কারণে বর্ষা মৌসুমে সাধারণত জুন থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত নিমজ্জিত থাকে। দেশের নিচু ও হাওর এলাকাসমূহে রবি মৌসুমে বোরো-পতিত-পতিত ফসল বিন্যাসের আওতায় কৃষকরা একক ফসল হিসেবে শুধু বোরো ধানের আবাদ করেন। এর ফলশ্রুতিতে স্থানীয় জনগণের জীবনযাত্রার মান বেশ দুর্দশাপূর্ণ এবং তারা প্রতিনিয়ত দরিদ্রতা ও অপুষ্টির সাথে লড়াই করছে। সে কারণে দেশের দক্ষিণাঞ্চল, হাওর এলাকা ও অন্যান্য জলাবদ্ধ এলাকার সমস্যাকবলিত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তার উন্নতির লক্ষ্যে স্থায়ী কৃষি উৎপাদনের জন্য ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ কৃষি প্রযুক্তিসমূহ উন্নতকরণ এবং এগুলোর সম্প্রসারণ অপরিহার্য।
এছাড়াও নিরাপদ শাকসবজি উৎপাদন এবং খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতে জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দপ্তর, সংস্থা  প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। শস্যের বৈচিত্র্য কৃষি উন্নয়নের প্রধান ভূমিকা পালন করতে পারে। দেশের জনগণের পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্য নিরাপত্তা বিধানকল্পে জনস্বাস্থ্যের ঝুঁঁকি এড়ানোর জন্য বছরব্যাপী সবজি উৎপাদনের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাহিদার সাথে মিল রেখে দেশের জনগণের দীর্ঘমেয়াদি পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার টেকসই রূপ দিতে নিরাপদ সবজি উৎপাদন ও সহজলভ্য করতে কৃষি তথ্য সার্ভিস কাজ করে যাবে। য়

লেখক : পরিচালক, কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ফার্মগেট,      ঢাকা-১২১৫, ফোন : ৫৫০২৮২৬০; ই-মেইল :  dirais@ais.gov.bd


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon